Dark web সিরিজ এর এই পর্বে আমরা Tor নেটওয়ার্ক সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করব। Tor হলো এমন একটি কমিউনিকেশন কিংবা যোগাযোগ ব্যবস্থা যার মাধ্যমে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী কোন ওয়েবসাইট কিংবা হিডেন সার্ভিসে অ্যাক্সেস করতে পারবে সম্পূর্ণ অ্যানোনিমাস ভাবে।
Tor সম্পর্কিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য :
১. টর হলো এমন একটি নেটওয়ার্ক সার্ভার যেটা একজন ইউজারের প্রাইভেসি এবং অ্যানোনিমাস থাকার জন্য তার ডাটাকে সুরক্ষিত রাখে এবং তাকে সম্পূর্ণরূপে হিডেন রাখে।
২. বর্তমানে সারাবিশ্বে যতগুলো অ্যানোনিমাস নেটওয়ার্ক রয়েছে তার মধ্যে টর হল সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং অন্যতম একটি নেটওয়ার্ক। টর্ক এর সার্ভিস ব্যবহার করে আমরা সার্ফেস এবং হিডেন ওয়েব দুটোতেই এক্সেস নিতে পারব।
৩. টর সাধারণত কম্পিউটারের সাথে হিডেন নেটওয়ার্কে যুক্ত হতে সাহায্য করে। Tor এর হিডেন নেটওয়ার্ক হলো অনিয়ন সার্ভিস। অনিয়ন সার্ভিস সম্পূর্ণ হিডেন এবং অ্যানোনিমাস ভাবে ইউজারকে বিভিন্ন ধরনের সাহায্য করে থাকে।
৪. অনিয়ন সার্ভার এবং রাউটিং সর্বপ্রথম তৈরি করা হয়েছিল আমেরিকান আর্মির যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখার জন্য। পরবর্তীতে এই টর নেটওয়ার্ক সম্পূর্ণ বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
আমরা কেন Tor ব্যবহার করব :
বর্তমান বাংলাদেশে আমরা সবাই ফেসবুক ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা ফেসবুক অ্যাপ আমাদের লোকেশন আমাদের অপারেটিং সিস্টেম এবং অন্যান্য ক্যামেরা ইনফর্মেশন সহ সকল ইনফরমেশন অ্যাক্সেস করতে পারে। এমনকি তারা আমাদের লেখালেখি এবং ক্লিপবোর্ড এর উপর নজরদারি করে থাকে। এছাড়াও ফেসবুক চাইলে যেকোনো সময় আমাদের ক্যামেরা ওপেন করে আমাদের সমস্ত অ্যাক্টিভিটি তারা নজর রাখতে পারবে এবং যেকোনো সময় সেটা তাদের ওয়েব সার্ভারে পাঠাতে পারবে।
অপারেটিং সিস্টেম গুগল কোন দিক থেকে কম নয়। কম্পিউটারে ক্রোম ব্রাউজার এবং মোবাইল ব্যবহার করার ফলে গুগোল যেকোন সময় আমাদের লোকেশন এর এক্সেস নিতে পারে। এমনকি আমাদের ফোনে কোন সিম না থাকলেও এবং জিপিএস বন্ধ থাকলেও গুগোল যেকোন সময় আমাদের লোকেশন অ্যাকসেস ওপেন করতে পারবে এবং সেই লোকেশন অ্যাক্সেস যেকোন কাউকে পাঠাতে পারবে। এছাড়া গুগোল অটোফিল নামক নতুন একটি সিস্টেমের মাধ্যমে আমরা কোন ব্রাউজারে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ইনপুট করলে সাথে সাথে গুগোল সেটা ধরে ফেলে এবং নিজের সার্ভারে সেই ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড সেভ করে রাখে। এছাড়াও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট কে অ্যাক্সিস দেওয়ার মাধ্যমে মোবাইল ফোনের যেকোন সময় ক্যামেরা ওপেন সহজে কোন ধরনের অ্যাক্টিভিটি গুগোল নজরদারি করতে পারে।
গুগলের বর্তমান সিইও “Sundar Pichai” নিজেই একটি ইন্টারভিউ তে বলছিল সে একজন সাধারন ইউজারের তথ্য অ্যাক্সেস করতে পারে এবং বিশেষ ক্ষেত্রে তারা একজন ইউজারের তথ্য অ্যাক্সেস করে। তিনি আরো বলেন একজন অ্যান্ড্রয়েড ইউজার এর ব্রাউজিং ডাটা থেকে শুরু করে লোকেশন হিস্টরি এমনকি সে কোন কোন ওয়েবসাইট এ ক্লিক করছে এবং সেই ওয়েবসাইটে কি করছে তার সমস্ত তথ্য এবং অ্যাক্টিভিটি গুগোল নজরদারি করে থাকে।
শুধুমাত্র গুগল এবং ফেসবুক নয় এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশে আরও বড় কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন দারাজ এর মত বড় বড় ওয়েবসাইটগুলো। এছাড়া টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ, লিংকডইন তো রয়েছেই। এমনকি মাইক্রোসফট এর গিটহাব ( কোড শেয়ারিং প্ল্যাটফর্ম ) অন্য সমস্ত ডেভলপারের কোড চুরি করার জন্য কিছুদিন আগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিল। সুতরাং সারফেস ওয়েবে আমাদের তথ্য কোনভাবেই সুরক্ষিত নয়।
আপনারা যদি ভেবে থাকেন তাদের ক্ষমতা এই টুকুই তাহলে আপনারা সবাই ভুল ভাবছেন। ধরুণ আমার একটি ওয়েবসাইট আছে এবং সে ওয়েবসাইটে গুগল এডসেন্স আছে। অথবা ধরুন আমার একটি ওয়েবসাইট আছে এবং সে ওয়েবসাইটে আমি ফেসবুকে রিঅ্যাকশন কিংবা ফেসবুকে কোনো ভিডিও আমি এম্বেড করে আপলোড করলাম। যদি কোন ইউজার যার কোনো ফেসবুক একাউন্ট নেই এবং কখনো ব্যবহার করিনি সে যদি উক্ত ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে তাহলে সেই এমবেড করা ভিডিওর মধ্যে থাকা সিক্রেট কোড এর মাধ্যমে উক্ত ইউজার এর সমস্ত ডাটা ফেসবুকের কাছে চলে যাবে। সেই ইউজার কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করছে এবং কোথায় কোথায় ক্লিক করছে তার সমস্ত ডাটা একটি সিম্পল আইডেন্টিটি এর মাধ্যমে ফেসবুকে ডাটা সার্ভারে জমা থাকবে। গুগোল এ ক্ষেত্রে একই মেথড কাজ করে। পরবর্তীতে তারা এই ডাটা গুলো নিয়ে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিল্ড করে।